তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান জোর দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতি এবং ভূমি দখলের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। শুক্রবার (৮ মার্চ) সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর বিশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফিদান বলেন, "যারা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে গাজা দখল করতে চায়, তাদের মনে রাখা উচিত—আজকের সংকটের মূল কারণই হলো ইসরাইলের দখলদারিত্ব।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের অবশ্যই পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার জন্য ইসরাইলি চরমপন্থিদের প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে। আল-হারাম আল-শরিফের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের যে কোনো চেষ্টাকে আমরা কখনোই মেনে নেব না।"
ফিদান স্পষ্ট বার্তায় বলেন, "গাজা ফিলিস্তিনের ভূমি এবং সেটি চিরকাল ফিলিস্তিনেরই থাকবে। মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। ইতিহাস আমাদের কাজের ভিত্তিতে বিচার করবে।"
ফিলিস্তিন প্রসঙ্গের পাশাপাশি ফিদান সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, "সিরিয়ার জনগণের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ এসেছে। সেখানে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন গুরুত্বপূর্ণ, যা কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার ভিত্তিতে হতে হবে।"
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরিয়াকে ওআইসির সদস্যপদ পুনর্বহালের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং সিরিয়ার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথাযথ অবস্থান ফিরে পাওয়ার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।
ওআইসি সম্মেলনের ফাঁকে ফিদান মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তি, কাজাখস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুরাত নুরতলেউ, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা এবং পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ইসরাইলি সামরিক অভিযানের তীব্রতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ওআইসির জরুরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সদস্যরা ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় এবং সংকট মোকাবিলায় কূটনৈতিক ও মানবিক পদক্ষেপের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেন।
তুরস্কের দৃঢ় অবস্থান এবং ওআইসির ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া নতুন আশার আলো জাগাচ্ছে, যা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সহায়তা করতে পারে।